মাটি মামুন রংপুর:
রংপুরকে নিজেদের ঘাঁটি হিসেবে দাবি করলেও
উপজেলা নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছে জাতীয় পার্টি।
২৯ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপেও সফলভাবে নির্বাচনী
বৈতরণী পার হতে পারল না দলটি।
খোদ রংপুর সদর ও গঙ্গাচড়ায় দলটির প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়া দূরের কথা, সম্মানজনক ভোটও পাননি।
এ অবস্থায় তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী বলেছেন, ঘাঁটিতেই মাটি নেই জাতীয় পার্টির।
এর আগে প্রথম ধাপের নির্বাচনে পীরগাছায় ও
দ্বিতীয় ধাপে পীরগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় পার্টির
প্রার্থী তৃতীয় অবস্থানে ছিল।
এ ছাড়া আট উপজেলার চারটিতে চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রার্থীই দিতে পারেনি দলটি।
ফলে এক সময়ের জাতীয় পার্টির ঘাঁটি রংপুরে দলের নেতাকর্মীর মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
তৃতীয় ধাপে রংপুর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান
পদের প্রার্থী ছিলেন আটজন।
২৮ হাজার ২৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন।
৯ হাজার ৭২৮ ভোট পান জাতীয় পার্টির মাসুদ নবী মুন্না, তাঁর অবস্থান চতুর্থ।
গঙ্গাচড়া উপজেলায় আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ২৮হাজার ৪১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মোকাররম হোসেন সুজন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান বুলু মাত্র ৪২২ ভোট পেয়ে সপ্তম অবস্থানে থাকেন।
তিন ধাপে রংপুরের ছয় উপজেলায় নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হলেও কাউনিয়া ও মিঠাপুকুরে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিতে পারেনি জাতীয় পার্টি। চতুর্থ ধাপে ৫ জুন অনুষ্ঠেয় তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলাতেও তাদের কোনো প্রার্থী নেই।
এক সময়ের ঘাঁটিতে দলটির এমন দশা নেতাকর্মীকে ভাবিয়ে তুলেছে।
দলের সাংগঠনিক অবস্থাও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা
করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে
রংপুর সদর ও গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রতিদ্বন্দ্বিতা দূরের কথা, সম্মানজনক ভোটও জোটেনি
চার উপজেলায় পরাজয় ভাবিয়ে তুলেছে নেতাকর্মীকে বলেন, রংপুর একসময় জাতীয় পার্টির ঘাঁটি ছিল।
এখানে আগে দল থেকে যে কাউকে দাঁড় করালেই
বিপুল ভোটে জয়ী হতো এখন সেই প্রেক্ষাপট নেই।
এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রমাণ মিলেছে, মানুষের
মধ্যে এখন আর লাঙ্গলপ্রীতি কাজ করে না।
প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদের আবেগ দিয়ে এ অঞ্চলে আর রাজনীতি করা যায় না।
দলের সাংগঠনিক অবস্থাও ভেঙে পড়েছে।
নির্বাচনে ভরাডুবির কারণ জানতে চাইলে তারা
বলেন, দলের সাংগঠনিক অবস্থা দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়া, দলের নেতাকর্মীর অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং ত্যাগী নেতাকর্মীকে মূল্যায়ন না করায় এমনটি হয়েছে।
এ ছাড়া দলের কার্যক্রম না থাকার বিষয়টিও প্রভাব ফেলেছে নির্বাচনে।
জাতীয় পার্টি রংপুর মহানগরের সাধারণ
সম্পাদক এস এম ইয়াসির বলেন, সব সময়
প্রেক্ষাপট একই রকম থাকে না।
উপজেলা নির্বাচনে পরাজয় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় ছিল জাতীয় পার্টি।
তবে পরপর চারটি উপজেলায় প্রার্থীর পরাজয় অবশ্যই চিন্তার কারণ।
তাই নতুন করে দলের কার্যক্রম এবং সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
রংপুরের সব উপজেলায় প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি কেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন,
ভোটদানে এখন ভোটারদের আগের মতো উৎসাহ
নেই।
তাই অনেক ভালো প্রার্থীই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান না।