বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
যশোরের ঝিকরগাছার পল্লিতে ৮ম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে মিজানুর রহমান (৪০) নামে এক প্রতিবেশির বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে সোমবার ঝিকরগাছা থানায় ভিকটিমের মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
ঘটনাটি ঝিকরগাছার উপজেলার কুমরী গ্রামে ঘটে।এ ঘটনার পর স্থানীয় মাতব্বাররা ধর্ষক মিজানের পরিবারের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে এ যাত্রায় রফা হয়।কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিজানুর রহমানকে আটক করেছে।
আটক মিজানুর রহমান উপজেলার কুমরি গ্রামের আব্দুল গফ্ফারের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামী মিজানুর রহমান ও বাদির বাড়ি পাশাপাশি এবং গ্রাম্য চাচা শ্বশুর সম্পর্কের। কারণে অকারণে বাদি ও আসামীদের বাড়ি যাতায়াত ছিল। বাদির ১৪বছরের কিশোরী স্কুলের যাওয়া আশার সময় আসামী বাদির মেয়েকে বিভিন্ন সময় ইয়ারকির ছলে কিছু কটু কথা বলিত, যাহা বাদির মেয়ে বাড়িতে এসে বাদির সাথে বলিত। কিন্তু আসামী বাদির মেয়ের প্রতিবেশী দাদা হয় বলে বাদি কিছু মনে করতো না। আমাসীদের পুকুরে বাদির মেয়ে ও তার চাচাতো ৮বছরের বোনসহ গোসল করতে গেলে আসামী পৃথক ভাবে বাদির মেয়েকে প্রলোভন দিয়ে তার ঘরে ডাকিত এবং কু—রুচিপূর্ণ্য কথাবার্তা বলিত। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) বাদি তার বাড়িতে থাকা অবস্থায় বাদির মেয়ে ও তার চাচাতো বোন দুপুরের সময় আসামীদের পুকুরে গোসল করতে গেলে ঐ সময় আসামীর স্ত্রী ও ছেলে বাড়িতে না থাকায় সুযোগে আসামী কৌশলে বাদির মেয়েকে তাহার ঘর ঝাড়– দিয়ে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে আসামীর শয়ন কক্ষে নিয়ে যায় এবং শয়ন কক্ষের খাটের উপর বসিয়ে আসামী বাদির মেয়ের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এসময় বাদির মেয়ে চিৎকার চেচামেচি করতে গেলে আসামীর খাটের নিচে থাকা ছুরি বের করে বাদীর মেয়েকে ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে আসামী মিজানুর রহমান বাদির মেয়ের তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং ছুরি দেখিয়ে কাউকে কোন কিছু না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখান। বাদির মেয়ে গোসল না করেই কান্না করিতে করিতে বাড়িতে গিয়ে বাদির সাথে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানান। ঘটনার বিষয়ে বাদি তার শ্বশুর—শাশুড়িকে জানান। বাদির শ্বশুর শাশুড়ি ঘটনার বিষয়ে আসামীর স্ত্রীকে জানান। তখন আসামীর স্ত্রী বাদিদের চুপথাকার জন্য অনুরোধ করেন। বাদিসহ বাদির পরিবারের লোকজন মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চুপ থাকে। বিষয়টি নিয়ে দুপরিবারের মধ্যে কানাঘুষির একপর্যায়ে গ্রামের কিছু লোকের মধ্যে জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ ও ওহাব মোল্লার নেতৃত্বে বিষয়টি নিয়ে আসামীর বাড়িতে শালিস বৈঠকে বসিয়ে মিজানের পরিবার নিকট থেকে ৩০হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে বিষয়টি রফাদফা করে। কিন্তু সেগুড়ে বালি ঢেলে দিল বেরসিক পুলিশ।খবর পেয়ে ঝিকরগাছার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিজানকে আটক করে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের মাতা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১২, তারিখ—১০/০৬/২০২৪ইং। থানার অফিসার ইনচার্জ বিএম কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি জানতে পেরে তাৎক্ষনিক আমি সহ আমার টিম অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার করে ও আসামীকে আটক করে থানাতে নিয়ে আসি। আসামির বিরুদ্ধে ৯(১) ২০০০সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩; জোর পূর্বক ধর্ষণ করার অপরাধে মামলা রুজি করে আসামীকে বিচারের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।